খবর
এফআর টাওয়ার ও রূপায়ন গ্রুপ নিয়ে এক চুমুক
![]() |
রূপায়ন গ্রুপের চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী খান মুকুল এফআর টাওয়ারের মালিক |
বনানীর কামাল আতাতুর্ক এভিনিউতে দেশের শীর্ষস্থানীয় নির্মাণ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান 'রূপায়ন'। ২০১৫ সালের এপ্রিলের ভূমিকম্পের এই প্রতিষ্ঠানের ২২ তলা ভবন এফআর টাওয়ার হেলে পাশের বিল্ডিংয়ে ঠ্যাকা দিয়ে দাঁড়িয়ে ছিল।
'রূপায়ন' এর অর্থকড়ির সীমাহীন শক্তির ব্যবহার নতুন ঘটনা না। এফ আর টাওয়ারের ঘটনাতেও ম্যানেজ করা হয় গণমাধ্যম, আমলাতন্ত্র, ইত্যাদি কিছু জায়গায় কিছু কিছু খুশি করে ফায়দা আদায়ের খেলা।
হেলে যাওয়া টাওয়ার কোনোভাবেই ব্যবহার করা যেতে পারে না। এটা বাচ্চাদের লেগো না, যে টোকা দিয়েই আবার সোজা করে দিলাম। হেলে যাওয়া মানেই স্ট্রাকচার নষ্ট হয়ে যাওয়া। ব্যবহার করা মানেই দুর্ঘটনা কেবল সময়ের ব্যাপার।
রানা প্লাজার সোহেল রানা থেকে রূপায়নের মালিক অনেক গুণ বেশি সম্পদশালী। সম্পদের পরিমাণ কয়েক বিলিয়ন ডলার সমতুল্য বলে শোনা যায়।
তিনি রাজউক থেকে ১৬ তলার অনুমোদন নিয়ে বনানীতে ২২ তলার এফআর টাওয়ার বানিয়েছেন। যেখানে অগ্নি নির্বাপণের কোনো ব্যবস্থা নেই। ২৮ মার্চ, ২০১৯ সেখানে আগুনে জীবন্ত দগ্ধ হলেন কমপক্ষে ১৯ জন মানুষ।
অক্টোবর, ২০১৭
প্রতারণা ও দুর্নীতির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার সম্পদ অর্জন, মানি লন্ডারিং ও সরকারি-বেসরকারি মালিকানার জমি দখল করে উত্তরায় রূপায়ন সিটি গড়ে তোলার অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সম্প্রতি দুদকের সহকারী পরিচালক মো. জাকির হোসেনের স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে রূপায়ন গ্রুপের চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী খান মুকুল ও তার স্ত্রী-পুত্রসহ ৬ জনের তথ্য চাওয়া হয়।
দুদক সূত্রে জানা যায়, রূপায়ন গ্রুপের চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী খান মুকুল ও তার স্ত্রী-পুত্রসহ ৬ জনের ব্যাংক হিসাবসহ সহায়-সম্পদের তথ্য চেয়ে সোনালী, অগ্রণী, জনতা, রূপালী, পূবালী, প্রাইম ও ইসলামী ব্যাংকসহ ১২টি ব্যাংক, বিআরটিএ (বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি), ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুরের জেলা রেজিস্ট্রার এবং রিহ্যাব সভাপতির কাছে চিঠি দেয় দুদক। দুদকের চিঠিতে মুকুলসহ ৬ জনের নামে কোনো প্রকার ব্যাংক হিসাব, এফডিআর বা আমানত থাকলে তা ২৫ অক্টোবরের মধ্যে জানাতে বলা হয়।
জুলাই, ২০১৭
ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেডের (ইউসিবিএল) গুলশান কর্পোরেট শাখা থেকে ৪৫ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে আত্মসাতের অভিযোগে রূপায়ন গ্রুপের মালিকের ছোট ভাইসহ দু’জনকে গ্রেফতার করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তারা হলেন রূপায়ন গ্রুপের চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী খান মুকুলের ছোটভাই রতন ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী আলী আকবর খান রতন ও সার্ভে কোম্পানি জিওটিকের স্বত্বাধিকারী প্রকৌশলী গোলাম কবির। গ্রেফতারের পর দু’জনকে আদালতে সোপর্দ করা হলে আদালত তাদের জেলে পাঠান।
দুদক সূত্রে জানা যায, ২০১০ সালের শেষের দিকে রতন ট্রেডার্সের মালিক আলী আকবর খান রতন ইউসিবিএল ব্যাংকের গুলশান কর্পোরেট শাখায় ১৮০ কোটি টাকা ঋণের জন্য আবেদন করেন। এ ঋণ পাওয়ার জন্য তিনি সাভারের মন সন্তোষপুর ও তৈয়বপুর মৌজায় শিল্পপতি এনএইচ বুলুর মালিকানাধীন ১০৫ বিঘা জমি নিজের দাবি করে তা ব্যাংকে বন্ধক রাখেন। ঋণ পাওয়ার জন্য তিনি ওই জমির মালিকানার কাগজপত্রও জাল করেন। পরে তার বন্ধকি সম্পত্তির বিপরীতে ঋণ দেয়া যায় কিনা তা যাছাইয়ের জন্য প্রকৌশলী গোলাম কবিরের জিওটিক সার্ভে কোম্পানিকে দায়িত্ব দেয় ব্যাংক। পরে তার রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করে সাভারের ১০৫ বিঘা জমির বিপরীতে ৪৫ কোটি টাকা ঋণ মঞ্জুর করে ব্যাংকের ওই শাখা।
অভিযোগ থেকে জানা যায়, শিল্পপতি বুলুর জমি নিজের দাবি করে ৪৫ কোটি টাকা ঋণ নেয়ার পর তা থেকে ৩৬ কোটি টাকা দিয়ে বুলুর ওই একই জমি কেনেন আলী আকবর খান রতন। অথচ ঋণ নেয়ার আগে তিনি ঘোষণা করেছিলেন, এ অর্থ দিয়ে আমদানি-রফতানি ব্যবসা করবেন। ২০১২ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি অডিট টিম এ ঋণ জালিয়াতির ঘটনা জানতে পারে। সেই সূত্রে ২০১২ সালেই অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। কিন্তু এতদিনেও অনুসন্ধান শেষ করতে না পারায় মামলা করতে দেরি হয়।
Post a Comment
1 Comments
ভাসুরের নাম কেউ মুখে আনতেছে না
ReplyDelete